এখন খবর ডেস্কঃ
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সাহেব নগর এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙনে জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি টাওয়ার নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। আরো একাধিক টাওয়ার বিলিন হবার উপক্রম হয়েছে।গতকাল
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার সম্পূর্ণ ভেঙে নদী গর্ভে বিলিন হয় ।
এলাকাবাসীরা জানান, পদ্মার তীর ঘেঁষে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ নির্মাণের কারণে অপর প্রান্তে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নে নদী ভাঙন তীব্র হয়েছে। রুপপুরেরর পারমানবিক বিদ্যৎ কেন্দ্র নির্মাণের পর থেকেই বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।তারই ধারাবাহিকতায় আজ জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের একটি টাওয়ার নদী গর্ভে বিলিন হয়। আরো বেশ কয়েকটি বিলিয়নের পথে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) ঈশ্বররদী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, ঝুঁকির বিষয়টি এক সপ্তাহ আগেই উদ্ধতনদের জানানো হয়েছিল। ফলে ওই সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় জাতীয় বিদু্ৎ সঞ্চালন লাইনে কোন প্রভাব প্রভাব পড়েনি।এই সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে ভেড়ামারা থেকে রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এখন বিকল্প লাইনে ফরিদপুর থেকে রাজবাড়ীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে ।বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাহেব নগর গ্রামে আরও ছয়টি টাওয়ার ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলেও তিনি জানান ।
বহলবাড়িয়া এলাকার মানুষের অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পোর্ট নির্মাণে প্রায় ৫ শত মিটার গ্রোয়েন বাঁধ পদ্মা নদীর মূল প্রবাহ চ্যানেলের মধ্যে নির্মিত হওয়ায় নদী তার গতিপথ হারিয়ে নতুন গতিপথ তৈরীর কারনে পদ্মার অপর প্রান্তে ভাঙন বেড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে থেকেই পদ্মা নদীর ডান তীরে ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ভাঙন চলছে। ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে এক হাজার চারশত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫০০ মিটার গ্রোয়েন (বাঁধ) নদীর মধ্যে আছে। সেখানে পানি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অপর পাড়ে ভাঙছে। সেটা এলাকাবাসীও ধারণা করছে। যেহেতু নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে, সেহেতু ভাঙনটা তীব্র হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভাঙনকবলিত কয়েকটি স্থান শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। নদীতে এখন পানি বেশি। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ শুরু করা হবে।
কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতার বলেন, বহলবাড়িয়াতে নদীভাঙন হচ্ছে এবং এটা নিয়ে প্রতি দিনই সেখানে আন্দোলন হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হয়েছে।